চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের ওপর পৃথিবীর যে ছায়া পড়ে তা সব সময় গোলাকার দেখায়।


 

প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪০ সালে দার্শনিক অ্যারিস্টটল তাঁর লেখা "অন দ্য হেভেন" শিরোনামের একটি বইয়ে পৃথিবী সমতল থালার মতো নয়, বরং গোলাকার একটি বস্তু" এর স্বপক্ষে ২টি যুক্তি তুলে ধরেন।
 
প্রথমত, চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের ওপর পৃথিবীর যে ছায়া পড়ে তা সব সময় গোলাকার দেখায়। একমাত্র পৃথিবীর নিজের আকার গোলাকার হলেই কেবল এটি সত্য হতে পারে। 
 
অন্যদিকে পৃথিবী যদি চাকতির মতো সমতল হত, তাহলে চাঁদের ওপর তার ছায়া হওয়া উচিত ছিল বিলম্বিত ও ডিম্বাকার। তবে সে ক্ষেত্রে সূর্য যদি এই সমতল চাকতির সরাসরি ওপরে কখনো অবস্থান করত, শুধু তখনই চাঁদের ওপর পৃথিবীর ছায়া গোলাকার দেখা যাওয়ার কথা।
 
দ্বিতীয়ত, দেশে-বিদেশে ভ্রমণের কারণে গ্রিকরা জানত, উত্তরের অঞ্চলগুলোর তুলনায় দক্ষিণের অঞ্চল থেকে ধ্রুবতারা আকাশে কিছুটা নিচের দিকে দেখা যায়। মিসর ও গ্রিসে ধ্রুবতারার আপেক্ষিক অবস্থানের পার্থক্য হিসাব করে অ্যারিস্টটল পৃথিবীর পরিধি আনুমানিক চার হাজার স্টেডিয়া বলে উল্লেখ করেছিলেন। এক স্টেডিয়ার দৈর্ঘ্য কতটুকু তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে এর পরিমাপ ২০০ গজ হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। এই হিসাবে পৃথিবীর পরিধির বর্তমানে স্বীকৃত দৈর্ঘ্যের চেয়ে দ্বিগুণ একটি সংখ্যা পেয়েছিলেন অ্যারিস্টটল।
 
এছাড়াও পৃথিবী গোলাকার হওয়ার পেছনে গ্রীকদের কাছে তৃতীয় আরেকটি যুক্তি ছিল। 
 
সেটি হচ্ছে পৃথিবী যদি গোলাকার না হতো, তাহলে দিগন্ত থেকে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসা কোনো জাহাজের প্রথমে পাল আর তার অনেক পরে মাস্তুল দেখা যায় কেন? 
 
অ্যারিস্টটল ভাবতেন, পৃথিবী স্থির এবং সূর্য, চাঁদ, গ্রহসমূহ ও অন্যান্য নক্ষত্র পৃথিবীকে কেন্দ্র করে বৃত্তাকার কক্ষপথে ঘুরছে। তার এই বিশ্বাসের পেছনের কারণটি ছিল আধ্যাত্মিক। 
 
মূলত সে কারণেই তিনি তিনি বিশ্বাস করতেন যে, পৃথিবী হচ্ছে এই মহাবিশ্বের কেন্দ্র আর এ ক্ষেত্রে বৃত্তাকার গতিপথই হচ্ছে সবচেয়ে নিখুঁত।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.